বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও রপ্তানি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছে দেশের আসবাব শিল্প। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসবাবশিল্পের কাঁচামালের ঘাটতির পরও স্থানীয় এবং রপ্তানি বাজার বাড়ছে। কাঁচামাল আমদানিতে বিপুল শুল্ক দেওয়ার পরও দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল মাসে) গত ১০ মাসে এ আয় পাঁচ কোটি ডলারের বেশি, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।
অবকাঠামো ও নীতি সহায়তা পেলে এই শিল্পে শত কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি আয় সম্ভব বলে মনে করছেন এ খাতসংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ফার্নিচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডেকর (বিএফআইডি) এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। আগামী ১৬ মে বুধবার পর্যন্ত চলবে চার দিনের এই প্রদর্শনী। গতকাল রবিবার রাজধানীর কুড়িল বিশ্ব রোডে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যসচিব শুভাশিষ বসু।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ১৮ হাজার কোটির অভ্যন্তরীণ বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা হয় স্থানীয়ভাবে। এ ছাড়া ১০ শতাংশ আমদানি করা হয়। এ ছাড়া গত পাঁচ বছরের প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি রপ্তানি আয় বেড়েছে। এ ছাড়া প্রতিবছরই ফার্নিচারশিল্পের রপ্তানিও বাড়ছে।
ইপিবির পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে এ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাঁচ কোটি তিন লাখ ডলারের রপ্তানি আয় হয়। এদিকে চলতি বছরের গত ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এ আয় অতিক্রম করেছে। এ খাতের আমদানি শুল্ক হ্রাস এবং বন্ডেড ওয়্যার হাউস এবং নগদ প্রণোদনা পেলে ২০২১ সালের মধ্যে এ আয় শত কোটি ডলার ছাড়িয় যাওয়া সম্ভব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে দেশের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়ে ছয় হাজার কোটি ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকে পাঁচ হাজার কোটি ডলার। আর আসবাব খাত থেকেও ১০০ কোটি ডলারের আয়ের লক্ষ্য আছে। এ জন্য সরকার রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে জোর দিয়েছে। অগ্রাধিকার খাত হিসেবে আসবাবশিল্পকেও গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধা দেওয়ার বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
বাণিজ্যসচিব বলেন, দেশের আসবাবশিল্প আমদানি বিকল্প হিসেবে কাজ করছে। সাধারণ মানুষ বর্তমানে গ্রামে আসবাব ও পাট পণ্যের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলছে। ফলে শহরমুখী মানুষ আবারও গ্রামমুখী হচ্ছে। উদ্ভাবন, মানসম্পন্ন পণ্যের অভাবে প্রতিযোগী দেশগুলো থেকে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। উদ্যোক্তাদের তিনি দেশের রাবারগাছকে প্রক্রিয়াজাত করে আসবাবশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. মুনতাকিম আশরাফ বলেন, দেশের আসবাবশিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা দেওয়া গেলে সরকারের ২০২১ সালের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ খাত।
বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম আকতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ ফার্নিচারশিল্প মালিক সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান প্রমুখ।